কত মানুষের বিভিন্ন ধরনের শখ থাকে। কেউ কুকুর-বিড়াল পুষতে ভালোবাসেন, কেউ ঘুরতে যেতে ভালোবাসেন, কেউ খেতে ভালোবাসেন আরও কত কি। কিন্তু কখনও কোনও পুরোহিতকে পুজো অর্চনার পাশাপাশি বাইক (Motorcycle) চালাতে দেখেছেন?
শুধু বাইক চালানোই নয়, তিনি আবার রেসারও বটে। তাঁর এটাই শখ। তাঁর কাহিনী শুনলে আপনিও তাজ্জব হয়ে যাবেন বৈকি। আপনিও কি ওই পুরোহিত সম্পর্কে জানতে কৌতূহলী? তাহলে আজ এই প্রতিবেদনটি রইল শুধুমাত্র আপনার জন্য।
কেরালার কোট্টায়াম জেলার ৩৪ বছর বয়সী এক পুরোহিত বর্তমানে শিরোনামে রয়েছেন। তিনি সকালে ঠাকুরের নাম কীর্তন, পুজো করেন। আবার কিছুক্ষণ পরেই নিজের শখ পূরণ করতে অর্থাৎ বাইক রেসিং করতে রাস্তায় নেমে পড়েন উন্নিকৃষ্ণণ ভিএলের (Unnikrishnan VL) সকাল শুরু হয় সাড়ে ৫ টায়। এই সময়ে তিনি পুধুককুলামগড়া দেবী মন্দিরের দরজা খোলেন। এর পরবর্তী কয়েক ঘন্টা মন্দিরে আসা ভক্তদের পরিদর্শন করতে সহায়তা করেন। পুজো সম্পর্কিত সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার সাথে সাথে তিনি মন্দিরে পোশাক পরিবর্তন করে এবং পর মুহূর্তেই সকলের চোখের সামনে বাইক আরোহী হয়ে ওঠেন।
উন্নিকৃষ্ণণ জানান, “আমি আমার ব্যাগ থেকে আমার রাইডিং গিয়ার, গ্লাভস, বুট এবং হেলমেট বের করি এবং সেগুলি পরে আমার Xpulse 200 চালাই। শুরুতে দর্শনার্থী ও স্থানীয়রা আমার এই অবতার দেখে বিস্মিত হলেও এখন তারাও এতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।‘
মন্দিরের পুরোহিত হলে কী হবে, উন্নিকৃষ্ণণ কম্পিউটার বিজ্ঞানে ইঞ্জিনিয়ারিং করেছেন এবং ২০১৩ সাল পর্যন্ত আইটি সেক্টরেও কাজ করেছেন। এর পরে, তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে পুরোহিত হয়েছিলেন। কিন্তু বাইকের প্রতি তাঁর ভালোবাসা একটুও কমে যায়নি।
উন্নিকৃষ্ণণ বলেন, ‘২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সময়টা বেশ ব্যস্ত ছিল। রাত থেকে দিন কীভাবে কেটে যেত বুঝতেই পারতাম না। হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। এরপরেই আমি আমার চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলাম এবং আমার বন্ধুর সাথে ভারত এবং নেপাল ভ্রমণে রওনা হয়েছিলাম। এটা ছিল আমার জন্য সেরা সিদ্ধান্ত। ২০২৩ সালে আমি একটি রেসিং মোটরসাইকেলের লাইসেন্স পেয়েছি। এ ছাড়া আমি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল র্যালি চ্যাম্পিয়নশিপ কোয়েম্বাটুরেও অংশ নিয়েছি।‘
উন্নিকৃষ্ণণ ভিএল-এর বাবা মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন। ২০১৯ সালে তাঁর মৃত্যুর পরে, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মন্দিরের পুরোহিত হয়ে ওঠেন।