মাধ্যমিক ফেল অটোওয়ালা আজ সেলেব্রিটি, বিদেশিনীকে বিয়ে করে বদলে গিয়েছে জীবন

জয়পুরঃ রাজস্থানের জয়পুরের রঞ্জিত সিং রাজের গল্প কোনো সিনেমার গল্পের চেয়ে কম কিছু নয়। তিনি ভ্রমণ করেছেন জয়পুর থেকে জেনেভা অবধি। তার মনের মধ্যে ছিল দৃঢ় সংকল্প এবং কিছু করার আবেগ। সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে যে, রাজ শৈশব থেকেই সামাজিক কুসংস্কারের সম্মুখীন হয়েছেন। তার জন্ম একটি দরিদ্র পরিবারে। শরীরের রং কালো হওয়ায় সব সময়ই শুনতে হতো কটূক্তি। এই জন্য ক্ষোভ ফুঁসলেও মুখে বলতে পারতেন না কিছুই।
একসময় জয়পুরের রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো রাজ আজ রয়েছেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। তিনি একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করেন এবং তার স্বপ্ন সেখানেই নিজের রেস্টুরেন্ট খোলার। বর্তমানে তিনি তার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল চালান, যেখানে তিনি মানুষকে বিভিন্ন জায়গা দেখান। ১৬ বছর বয়সে ‘রাজ” জয়পুরে একটি অটোরিকশা চালানো শুরু করেন। তারপর ২০০৮ সালের সময় অনেক অটো চালাতে চালাতেই সে ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ ইত্যাদি ভাষা শিখে নেন এবং এভাবে অনেক পর্যটকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন।
এইসময় রাজ শুরু করেন গাইড এর ব্যবসা। বিদেশিদের সাথে ঘুরতে থাকেন পুরো রাজস্থান। এখানেই ভাগ্য পরিবর্তন হয় দশম শ্রেণীতেও ব্যর্থ হওয়া রাজের। বিয়ে করেন এক বিদেশি মহিলাকে। রাজ গাইড হিসেবে নিয়ে যায় তাকে। কিন্তু দুজনেই একে অপরের প্রেমে পড়ে যায়। এমনকি ওই মহিলা ফ্রান্সে ফিরে যাওয়ার পরেও প্রেমে একটুও ভাটা পড়েনি। দুজনেই যুক্ত ছিলেন স্কাইপে। এর মধ্যে অনেকবারই রাজ চেষ্টা করেন ফ্রান্সে যাওয়ার। কিন্তু প্রতিবারই তার ভিসা হয়ে যায় প্রত্যাখ্যান। এরপর সেই মহিলা আবারো ফিরে আসেন ভারতে এবং দুজন মিলে ধর্নায় বসেন ফরাসি দূতাবাসের সামনে। এরপরই মিলে যায় ৩ মাসের ট্যুরিস্ট ভিসা।
২০১৪ সালে তারা বিয়ে করেন, বর্তমানে তাদের রয়েছে একটি সন্তানও। রাজ দীর্ঘ মেয়াদী ভিসার জন্য আবেদন করলে তাকে ফরাসি ভাষা শিখতে বলা হয়। এর পরেই তিনি ফরাসি ভাষা শিখেছিলেন। তিনি বর্তমানে জেনেভাতে থাকেন এবং একটি ইউটিউব চ্যানেলও চালান। সে অনেক ঘুরে বেড়ায় এবং তার সম্পর্কে কথা বলে। তিনি বিশ্বাস করেন যে তিনি ভ্রমণ করে অনেক কিছু শেখেন।