দুবাইয়ের মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে ভারতে এসে শুরু করেন স্ট্রবেরি চাষ, আজ আয় ৭ লাখ টাকা

দেশে ব্যাবসা (Business) করা সুবিধার করে দেওয়ার পর থেকেই ব্যাবসার বহর বেড়েই চলেছে। ভারতে (India) তৈরি হচ্ছে একের পর এক ইউনিকর্ন সংস্থার। আর দিনদিন ব্যাবসার মান উন্নয়ন হওয়ায় মানুষ চাকরীর একঘেঁয়ে জীবন ছেড়ে নিজেদের স্বাধীন ব্যাবসা শুরু করতে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছে। আজ তেমনই একজনের কথা বলবো যিনি দুবাই (DUbai) এর মোটা অংকের চাকরী ছেড়ে ভারতে এসে শুরু করেন নিজের ব্যবসা।
ভারত কৃষিনির্ভর দেশ। এখানে মানুষ কৃষির প্রতি সদাই সংবেদনশীল। এমতাবস্থায় উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরের বাসিন্দা নবীন মোহন রাজবংশী প্রথমে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে নিজের ব্যাচেলর ডিগ্রী সম্পূর্ন করার পর MBA করেন এবং এরপর মোটা অংকের চাকরি নিয়ে পাড়ি দেন দুবাই। কিন্তু সেখানে তার মন টেকেনি। আর তার ভাগ্য বদল হয় করোনা ভাইরাসের সময়। দেশে ফিরে কৃষিকাজ শুরু করে ভাগ্য বদলে যায় তার।
ভারতে ফেরার পর নবীনের সীতাপুর কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে আধুনিক প্রযুক্তিতে স্ট্রবেরি চাষের প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। দুবাইতে থাকাকালিন তিনি লক্ষ্য করেন সেখানে প্রচণ্ড গরম থাকা সত্ত্বেও কি সুন্দর চাষ হয়েছে। আর সেজন্যে তিনি দেশে দ্বিগুণ উৎসাহে চাষ শুরু করেন। সার তৈরির জন্য ব্যাবহার করেন ট্রাইকোডার্মা, সডোমোনাস এবং দেশি গুড়ের সংমিশ্রণ, যা মাটিকে অত্যন্ত উর্বর করে তোলে।
নবীন তার এক একর জমিতে ২০,০০০ স্ট্রবেরি চারা বপন করেন। সেচের প্রয়োজনে ব্যাবহার করে। ড্রিপ প্রযুক্তির। এরপর নিজের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তার ১ একর জমি থেকে ১৫০-১৬০ কুইন্টাল স্ট্রবেরি উৎপাদন করতে পারেন তিনি। মাত্র ৩ লাখ টাকা খরচ করে শুরু করেন এই চাষ। আর সেখান থেকে তার লাভ হয় ৬ লক্ষ টাকা! শুধু তাই না, মাঠে তিনি স্ট্রবেরি গাছের মাঝে মাঝে গাঁদা গাছ লাগিয় সেখান থেকেও ১ লাখ টাকা রোজগার করে নেন।
আজ তিনি শুধুই যে নিজে রোজগার করছেন তাই নয়। একইসাথে গ্রামের অন্যান্য মানুষকেও স্বনির্ভর করে তুলতে সাহায্য করছে নবীন রাজবংশী। কিছুটা হলেও তিনি গ্রামের মানুষকে শহর বিমুখী করতে পেরেছেন তিনি। আসলে কাজ না থাকায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছিল গ্রামের পর গ্রাম কিন্তু তার পদক্ষেপের ফলে লাভবান হয় সবাই।
গ্রামের বহু মানুষ কাজ করেন তার স্ট্রবেরি খামারে। আর এর ফলে নবীনের পাশাপাশি উপকৃত হয়েছেন গ্রামের মানুষও। প্রসঙ্গত স্ট্রবেরি উৎপাদনের জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার কর্তৃক অনুপ্রেরণা জোগানো হয়। প্রত্যেক কৃষককে হেক্টর প্রতি ৫০ হাজার টাকা অনুদান দিচ্ছে যোগী সরকার। তাই চাষের প্রতি ঝুঁকি বেড়েছে সাধারণ মানুষের।