এক সময় বিক্রি হয়ে যাচ্ছিল কোম্পানি, নিজের গহনা বন্ধক টাটা গ্রুপকে বাঁচান এই মহিলা

অনেক জায়গাতেই আমরা শুনে থাকি যে, প্রতিটি সফল পুরুষের পিছনে কোনো না কোন মহিলার হাত থাকে। কিন্তু জানেন কি এই কথাটা ভারতের অন্যতম বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান টাটা গ্রুপের (Tata Group) জন্যও লাগু হতে পারে। হ্যাঁ টাটা গ্রুপের সাথে সম্পর্কিত এই গল্প অনেকেই জানেননা।
আসলে আজ টাটা গ্রুপ বিশ্বের এক অন্যতম বড় কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। পড়শি দেশ পাকিস্তানের মোট GDP এর থেকে বেশী সম্পদ রয়েছে টাটা গ্রুপের কাছে। কিন্তু এই টাটা গ্রুপের সাফল্যের পিছনেও রয়েছে এক মহিলার হাত। যদিও তাকে খুব বেশি মানুষ চেনেন না, তার নাম লেডি মেহেরবাই টাটা।
টাটা গ্রুপ আজ যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে তার মুখ্য কারণ তিনিই। টাটা গ্রুপ খুবই খারাপ সময়ের মুখোমুখি হলে সেখানে নিজের গহনা বন্ধক রাখেন লেডি মেহেরবাই টাটা। তিনি নিজের সমস্ত টাকা ব্যাংকে জমা রেখে টাকা জোগাড় করেন। এরপর গড়ে ওঠে আজকের বিখ্যাত টাটা স্টিল।
আসলে বিখ্যাত লেখক হরিশ ভাট তার Tata Stories: 40 Timeless Tales To Inspire You বইতে লিখে জানান যে, কীভাবে লেডি মেহরবাই টাটা তখন টাটা স্টিলকে সমস্যা থেকে বের করে আনেন। লেডি মেহরবাই ছিলেন জামশেদজি টাটার বড় ছেলে স্যার দোরাবজি টাটার স্ত্রী। স্যার দোরাবজি টাটা তার স্ত্রীর জন্য লন্ডনের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোট ২৪৫.৩৫ ক্যারেট জুবিলি ডায়মন্ড কেনেন।
১৯০০ সালের সময়ই এই হীরার দাম ছিল ১ লক্ষ পাউন্ড! কিন্তু ১৯২৪ সালে সেই মহা মূল্যবান হীরা বিক্রি করে দিতে হয় লেডি মেহেরবাইকে। টাটা স্টিল ডুবতে বসলে এই হীরা বিক্রি করে কোম্পানিকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সময়টা এমনই খারাপ ছিল যে, কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার টাকা ছিল না টাটা গ্রুপের কাছে।
সেই দুঃসময়ে লেডি মেহেরবাই এগিয়ে আসেন এবং জুবিলি ডায়মন্ডসহ তার সম্পত্তি ইম্পেরিয়াল ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখেন। আর তারপর টাটা স্টিল এক নতুন মাইলফলক তৈরি করেছে। তারা আজ শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বেই নিজেদের আধিপত্য স্থাপন করেছে। জানিয়ে রাখি, সেই সংকটের সময়ও কিন্তু কোনো কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়নি টাটার তরফে।