শেষ হতে চলেছে আইপিএল ২০২২ এর গ্রুপপর্ব। কিন্তু এইবছর আইপিএল এর ৬৬ তম ম্যাচে কলকাতার তরুণ তুর্কি, ব্যাটসম্যান রিঙ্কু সিং রয়েছেন সংবাদ শিরোনামে। নিজের বিস্ফোরক ব্যাটিং দিয়ে সবার নজর কেড়েছেন এই খেলোয়াড়। এখন সবার মুখে একটাই নাম, রিঙ্কু সিং। লখনউয়ের বিপক্ষে ঝড়ো পারফর্ম্যান্স তাকে নিয়ে আসে লাইম লাইটে। মাত্র ১৫ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৪০ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। তার এই পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করেই ম্যাচটি প্রায় চলে আসে কেকেআরের ঝুলিতে, কিন্তু তবুও শেষরক্ষা যদিও হয়নি।
তবে তার ব্যাটিং দেখে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন মানুষ। কঠিন লড়াইয়ের পর আইপিএলে জায়গা করে নিয়েছেন এই খেলোয়াড়। এরই সাথে আলিগড় থেকে রিংকু সিং এর উঠে আসার গল্পটিও বেশ অনুপ্রেরণাদায়ক, যা তরুণ খেলোয়াড়দের মধ্যে একটি নব উদ্যম যোগাবে। কিন্তু কিভাবে রিঙ্কু সিং আইপিএল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারলেন? সে যাত্রা কতটা কঠিন ছিল তার জন্য?
রিঙ্কু সিং এর পরিবারে রয়েছেন তারা মোট ৫ ভাইবোন। তার এক ভাই অটোরিকশা চালায়, অন্যজন কোচিং সেন্টারে কাজ করে। রিংকুর পড়াশোনায় তেমন আগ্রহ ছিল না কোনোদিনই, যার কারণে নবম শ্রেণিতে ফেল করে সে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি বিরাট মনোযোগ ছিল তার। যার জন্য তাকে বেশ কয়েকবার পরিবারের সদস্যদের কাছে মারও খেতে হয়েছে তাকে, কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। সবসময় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
এক সাক্ষাতকারে রিঙ্কু সিং জানান যে, ক্রিকেট খেলার জন্য ২০১২ সালে তার বাবার কাছে তাকে মারও খেতে হয়েছিল। কিন্তু ওই একই বছর ক্রিকেট খেলে মোটরসাইকেল জিতে নেন তিনি, এরপর তার বাবা আর কোনোদিন তাকে ক্রিকেট খেলতে বাধা দেননি। তার মতে‚ ‘হয়তো সেই সময় তারাও বুঝতে পেরেছিল যে আমার ছেলে একদিন বড় প্লেয়ার হতে পারে।’
রিঙ্কু সিং আরও বলেছিলেন যে তিনি ক্রিকেটার হওয়ার আগে একবার তার ভাইয়ের কাছে ঝাড়ুদারের চাকরি চেয়েছিলেন, এরপর তার ভাই তাকে পরিষ্কার করার ঝাড়ু এবং মপ দিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে নিজেকে বেঁধে রাখেননি তিনি, ফিরে আসেন এবং ফিরে এসেই ক্রিকেটে কেরিয়ার গড়ার মনস্থির করেন তিনি।
এরপর ২০১৭ সালের সময় প্রথম আইপিএল-এ এন্ট্রি হয়েছিল রিঙ্কু সিংয়ের। তাকে আইপিএলে প্রথম নিলামে কিনে নে পাঞ্জাব কিংস। এইজন্য তারা খরচ করে ১০ লাখ টাকা। কিন্তু সে বছর তিনি একটিও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। এর পরে, ২০১৮ সালে কেকেআর এই খেলোয়াড়ের জন্য ৮০ লক্ষ টাকা খরচ করে। ২০১৮ সাল থেকে কেকেআর-এর একটি অংশ হয়ে গেছেন রিঙ্কু সিং।