মেঘের বুক চিরে ছুটবে ট্রেন, ভারতের গর্ব চেনাব ব্রিজের মনমুগ্ধকর ছবি শেয়ার করল রেল

সদ্যই শেষ হয়েছে ভারত (India) তথা বিশ্বের সর্বোচ্চ আর্চ ব্রিজ চেনাব সেতুর (Chenab Bridge) নির্মাণের কাজ। শুধুমাত্র রেল লাইনের কাজটুকুই বাকি আছে সেখানে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২২ সালের শেষের দিকে এই সেতু চালু করা হবে। চেনাব রেল সেতু যেখানে তৈরি করা হয়েছে তার একদিকে রয়েছে কউরি। অপরদিকে রয়েছে বাক্কল।

এই জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর সেতুর অনবদ্য নির্মাণের সৌজন্যে আগামী দিনে চেনাব সেতু হয়ে যেতে পারে দেশের অন্যতম সেরা পর্যটন ক্ষেত্র। সম্প্রতি এখানকার বেশকিছু নজরকাড়া ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মেঘের ওপর খিলান আকৃতির এই সেতুটির প্রকৌশল বিস্ময়ের চেয়ে কম নয়।

রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে শেয়ার করা এই ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে, মেঘের মধ্যে সগৌরবে স্থিত রয়েছে এই বহুল চর্চিত সেতু। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে চলছে এর নির্মাণকাজ। ৩৫৯ মিটার উঁচু আর ১,৩১৫ মিটার দীর্ঘ এই সেতুটি ইতিমধ্যেই বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ফেলেছে। এই রেলওয়ে আর্চ ব্রিজটির বিশেষত্ব হল এর উচ্চতা ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের চেয়েও ৩৫ মিটার বেশি।

উচ্চপ্রযুক্তির সমস্ত যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হয়েছে এই কাজে। পাশাপাশি রেলযাত্রীদের সুরক্ষার কথাও মাথায় রাখতে হয়েছে নির্মাণকর্মীদের। তাই সেতুর আকার অনুভূমিকের বদলে অর্ধচক্রাকার। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এই সেতু দ্বারাই ভারতীয় রেল (Indian Railways) নেটওয়ার্ক কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত সংযুক্ত হয়েছে। আর খরচের কথা বললে, ভারত সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, চেনাবে সেতুর পেছনে খরচ হয়েছে প্রায় ১,৪৮৬ কোটি টাকা।

আসলে এই সেতু নির্মাণের কাজ এতোটাও সহজ ছিল না মোটেও। ২০০৪ সাল থেকে সেতু তৈরি করে রেললাইন বসানোর কাজে ঝুঁকি ছিল ঢের। সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ ছিলো আবহাওয়া। এই জায়গায় বাতাসের বেগ হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ কিমি প্রতি ঘন্টা। তাই সেতুটিকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে বাতাসের বেগ ঘন্টায় ২৬০ কিমি ছাড়ালেও অনায়াসে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে।

সূত্রের খবর, সেতুটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে থাকতে পারে। এটি হিমাঙ্কের ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচের তামপাত্রা সহ্য করতে পারে। ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও গলবে না এই ব্রিজ। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের আট মাত্রা এটি সহ্য করতে পারবে। যার অর্থ প্রবল কম্পনেও এটি অক্ষত থাকবে। সর্বোপরি বলাই যায় যে, ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসবে’ ভারতীয়দের কাছে এর চেয়ে ভাল উপহার আর কী-ই বা হতে পারে?