বেলেল্লাপনা, এটা যেন বর্তমানে সমাজের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠেছে। বেপরোয়া ভাবের কারণে আজ যুবসমাজের অবক্ষয় ঘটছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু তাই বলে দেশের জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকার অবমাননা! এটাও আকছার ঘটতেই থাকছে। কিন্তু বর্তমানে যেভাবে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তা মানুষের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
যে জাতীয় সংগীত গাওয়ার অপরাধে মৃত্যু অবধি বরণ করতে হয়েছে বীর বিপ্লবীদের, যে জাতীয় পতাকা তোলার জন্য বাংলার মায়ের কোল খালি হয়েছে সেই পতাকার চরম অপমান করেছে দুই মেয়ে। সেই চরম অসভ্য ভিডিও দেখে অনেকেই আবেদন করেছেন আইনি পদক্ষেপ নিতে।
ব্রিটিশদের চোখে চোখ রেখে বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা যে ‘জন-গণ-মন’ গেয়েছে, সেই গানকেই চরম অপমান করেছে দুই ভাইরাল মেয়ে। এই অপমান সেই বিল্পবীদের অপমান যারা নিজের রক্ত ঝরিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, এই অপমান সেইসমস্ত মানুষের অপমান যারা নিজের জীবনদিয়ে তেরঙ্গা তুলেছেন। আর সেই শতকষ্টের জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় উঠে আসছে বিদ্রুপের সুর।
সবচেয়ে বড় কথা তারা পাকিস্তানি নন, আম ভারতীয় তরুণী। তাচ্ছিল্যের সুরে জাতীয় সংগীত গাইতে গাইতে হতে সিগারেট দেখিয়ে সেটিকে ‘ওই ফ্ল্যাগ! ওই ফ্ল্যাগ’ বলতে থাকেন। পতাকা ওড়ানোর ভঙ্গিতে হাত নাড়তে থাকেন একজন। আর এসব দেখে অন্যজন অতিরিক্ত মজা পেয়ে হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি দিতে শুরু করলেন।
জানিয়ে রাখি এই দুইজনের মধ্যে একজনের নাম রীশিতা দাস। আর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন হাইকোর্টের আইনজীবী আত্রেয়ী হালদার। যদিও ভিডিওর শেষে তারা হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে থাকেন, কিন্তু তার মধ্যে কোনো অনুতপ্ত অথবা অনুশোচনার লেশ মাত্রও ছিলনা। আর তাই ওইদুজনকে অনুকম্পা দেখাতে চাইছেন না নেটিজেনরা। সবাই তাদের কড়া শাস্তির দাবী তুলছেন।
এদিকে দুজনের কেউই হয়তো জানেন না, অথবা ভুলে গিয়েছেন যে, ভারতীয় সংবিধানের ১১টি ‘মৌলিক কর্তব্য’-এর মধ্যে প্রথমটিই হল দেশের জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংগীতের সম্মান করা। সস্তায় পাবলিসিটি পাওয়ার জন্য এমন কুপ্রথার প্রচলন হলে আগামী সময়ে সমাজ আরো বড় অবক্ষয়ের মধ্যে দিয়ে যাবে। আর এই দুজনকে তাদের ভুলের নজির হিসেবে কড়া শাস্তি দেওয়ার দাবি করেছেন অনেকে, কারণ আগামী সময়ে যাতে এধরনের ঘটনা ঘটাতেই ভয়পায় সবাই।