দেশের প্রিমিয়াম ট্রেন বলতে আমরা বুঝি রাজধানী, শতাব্দী এবং দুরন্ত এক্সপ্রেসকে। সাধারণ মানুষের স্বপ্ন থাকে এই তিনটি ট্রেনে ভারত ভ্রমণ করার। কিন্তু সরকারের নয়া সিদ্ধান্তের ফলে অতীত হতে বসেছে রাজধানী, শতাব্দী এবং দুরন্ত এক্সপ্রেস। তিনটি ট্রেনই এবার স্থান পাবে ভারতের অতীতে! কিন্তু কেন ট্রেন গুলোকে বসিয়ে দিচ্ছে সরকার?
বর্তমানে ভারত আধুনিকরণের দিকে তীব্র গতিতে ছুটে যাচ্ছে। আর তারই মাঝে পুরনো সমস্ত প্রতিষ্ঠা অতীতে স্থান নিচ্ছে। এই প্রিমিয়াম ট্রেনগুলিও তার ব্যতিক্রম নয়। আসলে রেল তাদের প্রিমিয়াম ট্রেনের গড় গতি ১৬০ কিমি প্রতিঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ২৪০ কিমি প্রতিঘণ্টতে নিয়ে যেতে চলেছে। আর সেখানেই সরকারের সিদ্ধান্ত পুরনো ট্রেন গুলোকে বদলে ফেলে সারা দেশই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালাতে।
রেলের দাবি, আগামী দুই বছরের মধ্যেই দিল্লি-মুম্বই এবং দিল্লি-কলকাতার মধ্যে ছুটতে শুরু করবে সেমি-হাই স্পিড ট্রেন। অমৃত যুগে দেশের মহানগর ও বড় শহরগুলির সংযোগকে আরো বাড়িয়ে তোলাটাই লক্ষ্য রেলের। রেলওয়ের একজন সিনিয়র আধিকারিক বলেন যে, সেমি-হাই স্পিড ট্রেন চালানোর জন্য বিদ্যুৎ, সিগন্যালিং সিস্টেম, ট্র্যাক এবং রোলিং স্টক সমস্ত কিছুরই পরিবর্তন করতে হবে।
২৬০ কিমি প্রতিঘন্টা গতিবেগে একটি সেমি-হাই স্পিড ট্রেনের মাধ্যমে কম সময়ে অনেক বেশী দুরত্ব পাড়ি দেওয়া সম্ভব। রেলের কর্মকর্তারা তার সাথে এও জানিয়েছেন যে, ICF এবং LHB কোচ এখন পুরনো প্রযুক্তি বা অতীতে পরিণত হয়েছে। রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্ত এবং অন্যান্য সুপারফাস্ট ট্রেনগুলিকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস দিয়ে প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এর গতি শুরুই ১৬০ কিমি প্রতিঘন্টা থেকে, যা ভবিষ্যতে ২৬০ কিমি প্রতিঘন্টা অবধি পৌঁছাতে পারে।
মোদী সরকার দেশে মোট ৭৫ টি বন্দে ভারত ট্রেন চালানোর জন্য ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে চলেছে। আগামী সাল অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট এর মধ্যেই ৭৫ টি বন্দে ভারত ট্রেন চালাতে চাইছে সরকার। বর্তমানে, দিল্লি থেকে কাটরা এবং দিল্লি থেকে বেনারসের মধ্যে চলা বন্দে ভারত ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ১৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। আর সেখানে নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে প্রতি ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার।
কিন্তু এরপরে যে, বন্দে ভারত ট্রেনগুলি আসনে সেগুলির সর্বোচ্চ গতি হবে ২০০, ২২০, ২৪০ এবং ২৬০ কিমি প্রতিঘন্টা। এছাড়া ট্রেনের আধিকারিকদের মতে, বন্দে ভারত-এর প্রতিটি নতুন সংস্করণের সাথে সাথে এর গতি, প্রযুক্তি এবং যাত্রী সুবিধা বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
বর্তমানে ভারতের দুটি ব্যাস্ত রুট হলো দিল্লি-হাওড়া এবং দিল্লি-কলকাতা। সেখানে এই উচ্চগতির ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা শুরু করা হচ্ছে। ২০০ কিমি গতিবেগের সেমি হাই স্পিড ট্রেন ছুটতে থাকবে এই রুটের মধ্যে দিয়ে। আর সেই জন্য রুটদুটিকে আপগ্রেড করা শুরু হয়েছিল, এখন সেই কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া ওই রুটের মধ্যে পাওয়া সেতুগুলোকেও মজবুত করা হয়েছে এই হাই স্পিড ট্রেনের জন্য। ইতিমধ্যে ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রুট দুটির সার্বিক উন্নয়ন করছে রেল।