রোজই বেড়ে চলেছে শিবলিঙ্গ! দিঘা-ডুয়ার্স ভুলে ঘুরে আসুন কলকাতার কাছের এই রহস্যময় পাহাড় থেকে

মামা ভাগ্নে পাহাড়ের নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন। বীরভূমের এই পাহাড় বেশ বিস্ময়কর। দুই পাথর একসাথে যেভাবে ব্যালেন্স করে রয়েছে সেটা বেশ দর্শনীয়। দুই পাথরের উচ্চতা আবার দুইরকম। কীভাবে এই দুই ভিন্ন উচ্চতার পাথর একসাথে জুড়ে রয়েছে সেটা কিন্তু অবাক করবে আপনাকে। তবে এটা শুনলে অবাক হতে পারেন যে, এই পাহাড়ের সাথে জড়িয়ে রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনী।
বীরভূমের দুবরাজপুরে অবস্থিত মামা ভাগ্নে পাহাড়ের কথা অনেকেই জানেন, কেও কেও নিশ্চয়ই ঘুরে এসেছেন। অনেকে অবশ্য এই পাহাড় দেখতে যান তার অবাক করা ভূমিরূপের কারণে। দুবরাজপুর শহরের একেবারে মধ্যিখানে জঙ্গলে ঘেরা পরিবেশের মাঝে রয়েছে এই পাহাড়।
আপনাদের জানিয়ে রাখি এই পাহাড় আসলে ছোটনাগপুর মালভূমির সম্প্রসারিত অংশ। আজ আমরা ঠিক এই পাহাড় সম্পর্কে নয় বরং তার সাথে জড়িত কিছু রোমাঞ্চকর বিষয় নিয়ে বলতে চলেছি। যারা এই পাহাড় ঘুরে এসেছেন তারা জানেন যে, পাহাড়ে রয়েছে তিলেশ্বর শিব মন্দির। এবার অবাক করার মতো বিষয় এই যে, সেই মন্দিরের শিবলিঙ্গ নাকি প্রতিদিন তিল তিল করে বড়ো হচ্ছে!
এই মন্দিরের নামই এসেছে সেখান থেকে। ছোট্ট শিলা থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে শিবলিঙ্গটি আজ এক বিশালাকার ধারণ করেছে। সেই পবিত্র স্থান দর্শন করতে পারেন ঘুরতে গেলে। পাহাড় থেকে সামনেই রয়েছে হেতমপুর রাজবাড়ি, সেখান থেকেও ঘুরে আসতে পারেন আপনি। আগ্নেয়শীলার ওপর অবস্থিত এই পাহাড়েই রয়েছে বিখ্যাত যোনি পীঠ।
মানুষজনের বিশ্বাস, আসামের কামাখ্যা মন্দিরের মতোই বিখ্যাত সেটি। সাথে এই পাহাড়ের যোগ রয়েছে মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রী রামচন্দ্রের সাথে। জানা যায়, হিমালয় থেকে সেতু বন্ধনের পাথর যখন রামচন্দ্র নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তার কিছু অংশ পড়েই উৎপত্তি হয়েছে এই মামা ভাগ্নে পাহাড়ের। অনেকে আবার বলেন, মহাদেবের নির্দেশে বিশ্বকর্মা যখন দ্বিতীয় কাশী তৈরি করছিলেন তখন কিছু পাথর এখানে পড়ে যায় সেই থেকেই মামা ভাগ্নে পাহাড় তৈরি।
জানিয়ে দিই, এখানের মামা ভাগ্নে পাহাড়ের মধ্যে মামা পাহাড়ের উচ্চতা ১৫ ফুট এবং ভাগ্নে পাহাড় উচ্চতায় ১২ ফুট। এই পাহাড়কে আবার ব্যালেন্সিং রকও বলা হয়ে থাকে। আবার এই পাহাড়েই রয়েছে রঘু ডাকাতের গুহা। জানা যায় এখানেই নাকি ডেরা বাঁধে রঘু ডাকাত। পাহাড়ের কোলেই রয়েছে পাহাড়েশ্বর আশ্রম, সেটি আবার তন্ত্র সাধনার জন্য বিখ্যাত।