বাবা ছিলেন দিনমজুর, জন্মদাতার স্বপ্ন পূরণ করে কোটি টাকার কোম্পানি গড়েছেন ছেলে

নিজেদের গন্তব্যে তারাই পৌঁছাতে পারে যাদের মধ্যে স্বপ্নকে সত্যি করে দেখানোর তাড়না থাকে। যারা তাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য প্রাণপাত পরিশ্রম করে নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর তাগিদ রাখে। এই সফলতার যাত্রার কোনো শর্টকার্ট হয়না, একমাত্র কঠিন পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ই সেই জায়গায় নিয়ে যেতে পারে কোনো ব্যক্তিকে। সেরকমই একজনের কথা আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরবো, যিনি ছোট থেকে চরম দারিদ্রের মধ্যে থাকলেও নিজের পরিশ্রমে পৌঁছে গিয়েছেন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে।
তার নাম মনোজ মীনা। রাজস্থানের জয়পুরের বাসিন্দা মনোজ নিজের জীবনে অনেক উত্থান এবং পতন দেখেছেন কিন্তু কখনোই নিজেকে হতাশ করেননি। চরম দারিদ্র্যপীড়িত হয়েও নিজের ভাগ্য তিনি নিজেই লিখেছেন, আর সেই পরিশ্রমের কারণেই আজ তিনি গড়ে তুলেছেন কয়েক কোটি টাকার এক ব্যাবসায়িক সাম্রাজ্য। আজকের এই প্রতিবেদন মনোজ মীনার জীবনী নিয়ে, যিনি নিজের ভাগ্য নিজের হাতেই লিখেছিলেন।
জয়পুরের পাশে একটি ছোট গ্রামে জন্ম মনোজ মীনার। তাদের বাড়ির খরচ চলতো তারা বাবার রোজগারের ওপর, যিনি নিজে একজন শ্রমিক ছিলেন। তাই মনোজের ছোটবেলা কেটেছে চরম দারিদ্রের মধ্যে। পরিবারের অবস্থা দেখে মনোজও তার বাবাকে সাহায্য করতে নেমে গেলেন। স্থানীয় স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে মনোজ, বিসিএ পড়া শেষ করে খুঁজতে থাকেন নিজের কাজ। এরপর অনেক কাজ পেলেও শেষ পর্যন্ত ডেলেভারি বয়ের কাজই শুরু করেন তিনি।
কিন্তু তার এই চাকরির রোজগার থেকে বাড়ির সমস্ত খরচ চালানো ছিল খুবই মুশকিল। সেইসময়ই তিনি অন্যান্য কাজের খোঁজ করতে গিয়ে ‘Cardekho’ নামের একটি কোম্পানিতে কাজ পেয়ে যান। শুরুতে মাত্র ৩০০০ টাকা বেতন পেতেন তিনি।
কিন্তু এই বেতনও তার পরিবারের খরচের কাছে ছিল খুবই স্বল্প। তাই সেই সময় তিনি তার মোট সঞ্চয় এবং ২ বন্ধুর সাহায্যে শুরু করেন নিজস্ব সফটওয়্যার কোম্পানি। তবে অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় তার সেই কোম্পানি। এই ঘটনার কিছুদিন পর তিনি সুযোগ পান রাজস্থান পত্রিকা গ্রুপে যোগ দেওয়ার।
২ বছর সেখানে কাজ করে তিনি পৌঁছান নয়ডাতে। সেখানে ২০১৯ সালে নিউজ-২৪ ডিজিটালের এসইও প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি সেখান থেকে নিজের কাজ শুরু করার কথা ভেবে নিজস্ব ওয়েবসাইট শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপরই তিনি টাইমস বুল নামের এক কোম্পানি শুরু করে প্রতি মাসে বিপুল আয় করছেন।