শুনানিতে অর্পিতাকে প্রেম নিবেদন করে বড় ফাঁসলেন পার্থ! ED-র হাতে এল মোক্ষম অস্ত্র

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে গারদে রয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও (Arpita Mukherjee) এখন জেলের ভাত খাচ্ছেন। অর্পিতার বাড়ি থেকে কয়েক কোটি টাকা, গুরুত্বপূর্ণ নথি, বিদেশি মুদ্রা, যৌন যন্ত্র সহ অনেক কিছুই পাওয়া গিয়েছিল। এরপরই ইডি (Enforcement Directorate) তাঁকে হেফাজতে নেয়।
বর্তমানে দুজনাই আলিপুর জেলে বন্দি। এর আগে পার্থবাবুকে আলিপুর জেলে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছিল। এক বন্দি তার দিকে মগ ছুঁড়ে হামলা করেছিল। এছাড়াও এক ছিঁচকে চোর পার্থবাবুকে মোটা দা বলেও কটাক্ষ করেছিল। অপা একই জেলে বন্দি হলেও তাদের দুজনার মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ হয়না। আর সেই কারণে শেষবার যখন দুজনার দেখা হয়েছিল ভার্চুয়াল বৈঠকে, তখন তাদের খুনসুটিও চোখে পড়ে। সেই কাণ্ডই ভাইরাল হয়ে যায় নেত দুনিয়ায়।
পার্থ-অর্পিতার কেমিস্ট্রি সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এবার সেই প্রেম বিলাপের জন্যই এবার মহা বিপদে পড়তে চলেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে যে, গ্রেফতারের পর থেকে এখনো পর্যন্ত পার্থ তার বান্ধবী অর্পিতার সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন নি। খোদ ED এই অভিযোগ তুলেছে। আর শেষ শুনানিতে পার্থ আর তার বান্ধবীর খুনসুটিই এখন তদন্তকারীদের হাতে মোক্ষম অস্ত্র তুলে দিয়েছে।
তারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে যেভাবে ইশারা করছিলেন এবং হার্ট সাইন দিয়ে যেভাবে পার্থবাবু প্রেম নিবেদন করছিলেন, সেটাই এখন তদন্তকারীদের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে বলে মত আইনজীবীদের একাংশের।
শেষ শুনানিতে পার্থ-অর্পিতার খুনসুটি নজরে পড়েছে পুলিশ, সাংবাদিক, আইনজীবী ও বিচার বিভাগীয় কর্মীদের চোখে। এখন কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে যে, বিষয়টি বিচারকেরও নজর এড়ায় নি। আদালতে উপস্থিত সবাই তাদের এই টুরু লাভ দেখেছেন।
ED সূত্রের খবর অনুযায়ী, জুলাইয়ে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটি টাকা নগদ, সাড়ে চার কোটি টাকা বিদেশি মুদ্রা এবং অনেক সোনার অলংকার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। কিন্তু পার্থ জানিয়েছিলেন যে, তিনি অর্পিতাকে চেনেন না। যদিও, অর্পিতা পার্থর উল্টো বয়ান দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, তার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া সমস্ত কিছুই পার্থর অমানত। এমনকি পার্থ-অর্পিতার যৌথ সম্পত্তিরও হদিশ পেয়েছে তদন্তকারীরা। শুধু তাই নয়, অর্পিতার জীবন বীমাতেও পার্থর নাম পাওয়া গিয়েছে। আর সেই কারণে দুজনার সম্পর্ক যে স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ED সূত্রের খবর, ভার্চুয়াল শুনানিতে দুজনার প্রেম বইলাম আদালতগ্রাহ্য জোরদার প্রমাণ নয়। কিন্তু পার্থবাবু যে তদন্ত কে প্রভাবিত করার জন্য অর্পিতার সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করে আসছিল, তা আদালতে সবার সামনেই প্রদর্শিত হয়ে গেল। ED-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, সেই কাণ্ড সবার সামনেই হয়েছে, আর সবাই তার সাক্ষী। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন এই তথ্য তুলে ধরা হবে। দরকারের জামিনের আবেদনের সময়েও এই প্রমাণ ব্যবহার করা যেতে পারে।
আইনজীবীদের একাংশের মতে, দুজনার এই প্রেমালাপ তদন্তকারীদেরই সুবিধা করে দিয়েছে। নিজেকে দুর্নীতি মুক্ত প্রমাণ করতে পার্থ এতদিন যে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে এসেছিল, তার প্রমাণ হিসেবেই এই ঘটনাকে ব্যবহার করবে তদন্তকারীরা।