পশ্চিমবঙ্গ ছেয়ে গিয়েছে নকল আলুতে! কীভাবে চিনবেন আসল কোনটি? রইল সহজ উপায়

কলকাতার (Kolkata) শহরতলীতে চন্দ্রমুখীর দামে বিক্রি হচ্ছে কমদামী ‘হেমাঙ্গিনী’ বা ‘হেমালিনী’ আলু (Potato)। নকল আলুতে বাজার ছেয়ে রয়েছে। যদিও চন্দ্রমুখীর সাথে দেখার মিল রয়েছে, কিন্তু এই ‘হেমাঙ্গিনী’ বা ‘হেমালিনী’ আলু স্বাদে সম্পূর্ন আলাদা। আর সেই কারণে দামেও ফারাক রয়েছে। কিন্তু তাতে কি, অসাধু ব্যবসায়ীরা চুটিয়ে চন্দ্রমুখী আলুর নামে বিক্রি করছেন এই হেমাঙ্গিনী আলু।

potato 1200x720

কী ফারাক রয়েছে এক হেমাঙ্গিনী আলুতে?
বিষয়টিকে খোলসা করে জানান হুগলির কৃষি সমবায় সমিতির এক সদস্য। তিনি বলেন, হেমাঙ্গিনী আলু আসলে মিশ্র প্রজাতির আলু। এটির চাষ করা হয় পঞ্জাব ও জলন্ধরের বিভিন্ন অংশে। আলু তৈরি হতে যেমন কম সময় লাগে, তেমনই ফলনও হয় বেশী। যেখানে ৫০ থেকে ৬০ বস্তা চন্দ্রমুখী আলুর উৎপাদন হয় সেখানে ৯০ থেকে ৯৫ বস্তা হেমাঙ্গিনী আলু পাওয়া যায়।

chandramookhi aloo
চন্দ্রমুখী আলু

উল্লেখ্য যে, এই বিষয়ে হুগলি জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শহরাঞ্চলের মানুষের কাছে বাইরে থেকে দেখে হেমাঙ্গিনী আলু এবং চন্দ্রমুখী আলু দুটোর মধ্যে ফারাক করা খুবই মুশকিল। চন্দ্রমুখী আলুর সঙ্গে জ্যোতি আলুর ক্রস ব্রিড করে তৈরি করা হয়েছে হেমাঙ্গিনী আলু। যেহেতু এই আলু হাইব্রিড তাই অল্প সময়ে ও কম খরচে চাষ করা যায়। হুগলি জেলার পুরশুড়া ও তারকেশ্বর অঞ্চলে এই আলুর চাষ হয়। চন্দ্রমুখী আলু যেখানে তিন থেকে চার মাস সময় লাগে উৎপাদন হতে। এই হাইব্রিড আলু সেখানে দেড় থেকে দু’মাসের মধ্যেই তৈরি হয়।”

aloo
হেমাঙ্গিনী আলু

তিনি আরো যোগ করেন, “একটি আলুর সিজনে দু’বার চাষিরা এই আলুর চাষ করতে পারেন। হাইব্রিড হওয়ার জন্য উৎপাদনের হারও বেশি। বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই হেমাঙ্গিনী আলুকেই চন্দ্রমুখী আলু বলে বিক্রি করছে। গ্রামের মানুষজনদেরকে ঠকানো খুব একটা সহজ হয় না, কারণ তারা চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত এবং আলু দেখে তারা বুঝতে পারে। তবে শহরাঞ্চল বা মফস্বলের মানুষজনদের খুব সহজেই বোকা বানিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যবসা রমরমিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে।’’

কিন্তু সাধারণ মানুষ কীভাবে বুঝবেন কোনটা চন্দ্রমুখী আর কোনটা হেমাঙ্গিনী আলু ?
এই বিষয়ে কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী জানান, দুইখানা আলুকে দেখে চেনা খুবই মুশকিল। কারণ ওপর থেকে দুটোর খোসাই খুব পাতলা। যদিও চেনার উপায় বাতলে দেন তিনি। তার কথায়, চন্দ্রমুখী আলুর ভিতরের অংশটা হালকা বাসন্তী (হলুদ) রঙের হয়, কিন্তু হেমাঙ্গিনী আলুর ভিতরটা হয় সাদা।

এছাড়া হেমাঙ্গিনী ভালো সেদ্ধ হয়না কিন্তু চন্দ্রমুখী আলু সিদ্ধ হওয়ার পর হাতে আঠার মতো লেগে থাকে। এরসাথে আরো একটি উপায় সম্পর্কে বাতলে দেন তিনি। চন্দ্রমুখি আলুর উপরে কল বা নতুন চারা চোখ থাকলে সেখানে আঙুল দিয়ে টিপলে ‘ফুট’ করে একটি শব্দ হবে, কিন্তু অন্যান্য কোনো আলুতে সেই শব্দ হয়না।

➦ আপনার জন্য বিশেষ খবর

Back to top button