অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)… কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) একজন দাপুটে বিচারপতি (Judge) হিসাবেই তার নাম যশ রয়েছে। বিগত এক বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) চলা একাধিক রায় নিয়ে তার নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত সকলের নজর কেড়েছে। এরই মাঝে তাঁর মুকুটে জুড়ল নয়া পালক।
সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের বার্ষিক রিপোর্ট। এটি একটি বই আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। আর সেখানে হাই কোর্টের বিচারপতিদের দেওয়া সেরা রায়গুলি জায়গা করে নিয়েছে। আর আপনি জানলে অবাক হবেন, এই বইতে জানানো হয়েছে সবথেকে সেরা রায় দিয়েছেন জাস্টিস অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
শুক্রবার প্রকাশিত হাইকোর্টের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) স্কুল চাকরির জন্য কোটি কোটি টাকা কেলেঙ্কারির ঘটনায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তের জন্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের আদেশকে গত এক বছরের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের অন্যতম সেরা রায় বলে অভিহিত করা হয়েছে।
গত বছর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির বিষয়ে দুর্নীতির মূলে পৌঁছাতে সিবিআই (Central Bureau of Investigation) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে সমান্তরাল তদন্তকারী হিসেবে ইডিও (Enforcement Directorate) এ বিষয়ে জড়িত হয়েছিল। এই আদেশের পরবর্তী ঘটনাগুলি পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে একটি বড় আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
সবথেকে বড় ঘটনা তখন ঘটে যখন তৃণমূল সাংসদ ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে CBI-কে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, গত বছরের জুলাই মাসে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী অর্পিতা মুখার্জিকে গ্রেফতার করে ED।
তৃণমূল বিধায়ক তথা পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য, বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা, পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গাঙ্গুলি এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যের মতো হেভিওয়েট শাসক দলের নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই সমস্ত বিতর্কের মধ্যে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তৃণমূল নেতৃত্বের তীব্র আক্রমণের মুখে পড়েন এবং তাঁর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে পর্যবেক্ষণ করার এবং শাসক দলের বিরুদ্ধে তাঁর ইচ্ছার তালিকা জোর করার অভিযোগ অবধি তোলা হয়। তারপরেও দমে থাকেন না বিচারপতি। দিতে থাকেন নিজের রায়।