দৈনিক আয় ১০০ টাকা! ৬০ টাকায় লটারির টিকিট কেটে কোটিপতি বীরভূমের দরিদ্র আচার বিক্রেতা

ভাগ্য হয়তো একেই বলে, নইলে ৬০ টাকার লটারির (Lottery) টিকিট (Ticket) কাটতে ব্যক্তি হয়তো ভাবতেও পারেননি যে তিনি কড়কড়ে ১ কোটি টাকার মালিক হয়ে যাবেন। হ্যাঁ শুনতে অবাক লাগলেও এটাই কিন্তু সত্যি। লটারি কিনতে অনেকেই আছেন যারা ভালোবাসেন। লটারি এমনই একটি নেশা যা মানুষের সহজে পিছু ছাড়ে না। অনেকেই আছেন যারা বছরের পর বছর চাকরি করে বা অন্যান্য কাজ করে টাকা আয় করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আবার অনেকেই আছেন যারা খুব অল্প সময়ের মধ্যে অনেক বেশি করে টাকা উপার্জন করতে চান। সে ক্ষেত্রে অনেক মানুষই আছেন যারা এই লটারি কেনার দিকে ঝোঁকেন। কেউ কেউ আছেন যারা বারবার লটারি কেটেও কয়েক হাজার টাকা জিততে পারেন না, আবার এমনও দেখা গিয়েছে যে একবার লটারির টিকিট কেটেই কোনো ব্যক্তি রাতারাতি কোটিপতি হয়ে গিয়েছেন।

   

যদিও চাটনি বিক্রেতা নূর আলম শেখের কপালে অন্যকিছুই লেখা ছিল। তিনি গ্রামে গ্রামে একটি ঠ্যালা গাড়ি নিয়ে আচার বিক্রি করেন। তাঁর দৈনিক আয় মাত্র ১০০ টাকা। মাথায় একপ্রকার ঋণের বোঝা। একদিন তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে লটারি টিকিট কিনবেন। ফলে যেমন ভাবা তেমন কাজ। রামপুরহাটের মুরারই থানার পলশা গ্রামের নূর আলম শেখ ১০ নভেম্বর ৬০ টাকা খরচ করে লটারির টিকিট কেনেন। ব্যস, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেই টিকিটই তাঁর ভাগ্যে এনে দিল ১ কোটি টাকা।

এদিকে এত টাকা পেয়ে একপ্রকার ভয়ে গুটিয়ে গিয়েছিলেন নূর আলম। সটান থানায় গিয়ে হাজির হন তিনি। এই বিষয়ে নূর বলেন, ‘‘গত শুক্রবার চাটনি বেচে বাড়ি ফেরার পথে বাঁশলৈ বাজারে এক লটারির টিকিট বিক্রেতার কাছে থেকে ৬০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনি। বাড়ি ফিরে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। দুপুর একটায় খেলায় ফল বেরোয়। ওই টিকিট বিক্রেতার একটি টিকিট এক কোটি টাকা জিতেছে বলে গ্রামে খবর ছড়িয়ে পড়ে। ঘুম ভেঙে, নম্বর মিলিয়ে দেখি আমিই জিতেছি।’’

স্থানীয়রা জানান নূর আলমের বাড়ির অবস্থা খুবই শোচনীয়। বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা মা। অন্যদিকে নূরের দৈনিক আয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। যা অভাবী সংসারে একপ্রকার চলেই না। নূর বলেন, “দিনের শেষে আয় হত ১০০-১৫০ টাকা। সেই টাকায় সংসার চালাবো না ওষুধের খরচ দেব? কোনও দিন ভাবিনি লটারি জিতব। পুলিশের কাছে আশ্রয় নিলে সমস্যা হবে না ভেবে থানায় এসেছি। টাকা পেলে আগে বাড়ি করার ইচ্ছা রয়েছে। একই সঙ্গে আচার বিক্রি ছেড়ে অন্য কোনও ব্যবসা করব। মেয়ের বিয়েতে কোনও সমস্যা হবে না।” এদিকে নূর আলমের এহেন টাকা জেতায় বেজায় খুশি সকলেই। বিশেষ করে বৈধ টিকিট বিক্রেতারা। মুরারই এলাকার বৈধ লটারির টিকিট বিক্রেতারা আশাবাদী যে অবৈধ লটারির টিকিট বিক্রি কমবে।