‘ভারত এমন একটি দেশ, যার কাছে সব সমস্যার সমাধান রয়েছে”, বললেন মোদীতে মুগ্ধ বিল গেটস

বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত বিলিয়নিয়ার এবং মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস (Bill Gates) এবার ভারতের (India) ভূয়সী প্রশংশা করেছেন। এমনকী ভারতকে বিশ্বের “সমাধান” হিসেবেও বর্ণিত করেছেন তিনি। নিজের লেখা প্রতিবন্ধে গেটস জানিয়েছেন যে, ভারত সারাবিশ্বের ভবিষ্যতের আশা। এছাড়া ভারতই পারে বিশ্বের সমস্ত বড় সমস্যার সমাধান করতে।
বিল গেটসের লিখেছেন, যখন বিশ্ব একাধিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছিল তখন ভারত উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। তার কথায়, “সমগ্র ভারত আমাকে ভবিষ্যতের জন্য আশা দেয়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হতে চলেছে। যার মানে আপনি সেখানে বেশির ভাগ সমস্যার সমাধান বড় স্কেলে করতে পারবেন। পাশাপাশি, ভারত প্রমাণ করেছে যে তারা বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে। গেটস বেশ কয়েকটি উদাহরণও দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন যে, ভারত পোলিও নির্মূল করেছে, এইচআইভি সংক্রমণ হ্রাস করেছে, দারিদ্রতা ও শিশুমৃত্যুর হারও কমিয়েছে। পাশাপাশি, স্যানিটেশন এবং আর্থিক পরিষেবাগুলিতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে।”
তার মতে ভারতের উদ্ভাবনী ক্ষমতার জোরেই সারাবিশ্বে লিডিং অ্যাপ্রোচ ডেভেলপ হয়েছে। এক্ষেত্রে রোটাভাইরাস ভ্যাকসিনের উদাহরণ তুলে ধরেছেন। তার কথায়, প্রতিটি শিশুর কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছানো এক মুশকিল বিষয়। কিন্তু ভারত নিজেই সেই কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেজন্য সেখানে ফ্যাক্টরি স্থাপন করা হয়েছে এবং বড় আকারের ডেলিভারি চ্যানেলও তৈরি করা হয়েছে। সেখানে গেটস ফাউন্ডেশন সহ অনেক সংস্থাই কাজ করছে।
বিল গেটস পুসাতে ভারতের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (IARI) ফান্ডিংয়ের বিষয়েও জানান। তিনি বলেন, “IARI-এর গবেষকদের কাজকে সমর্থন করার জন্য গেটস ফাউন্ডেশন ভারতের পাবলিক সেক্টর এবং CGIAR প্রতিষ্ঠানের সাথে হাত মিলিয়েছে।” সেখানে ১০ শতাংশ উচ্চফলনশীল এবং খরা-প্রতিরোধী ছোলার প্রজাতি নিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। যার ফলে ভারত তার জনগণের খাদ্যসংস্থান এবং কৃষকদের আরো ভালো সহায়তা করতে পারবে।
বিল গেটস IARI কে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেন, “জলবায়ু, ক্ষুধা এবং স্বাস্থ্যের মতো চ্যালেঞ্জগুলিকে অপ্রতিরোধ্য মনে হওয়ার একটি কারণ হল যে, আমাদের কাছে এখনও সেগুলি সমাধান করার সমস্ত সরঞ্জাম নেই৷ কিন্তু আমি আশাবাদী যে একদিন শীঘ্রই আমাদের IARI গবেষকদের মতো উদ্ভাবকদের ধন্যবাদ জানাবো।” এছাড়া বিল গেটস যে সামনের সপ্তাহেই ভারতে আসছেন সেই বিষয়েও লিখেছেন তার ব্লগ নোটে।
শেষে তিনি এও জানিয়েছেন যে , “পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো ভারতেরও সীমিত সম্পদ রয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের দেখিয়েছে যে সেই বাধা সত্বেও বিশ্ব কিভাবে উন্নতি করা যায়। সহযোগিতা এবং নতুন পন্থা অনুসরণ করে, সরকারি, বেসরকারি এবং জনহিতকর ক্ষেত্রে সীমিত সম্পদকে অর্থ এবং জ্ঞানের বড় সীমায় রূপান্তর করলেই অগ্রগতি সম্ভব। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি, সেক্ষেত্রে বিশ্বাস করি আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারব এবং একই সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারব।”