ক্লাসে আসেনা পড়ুয়ারা! বিশ্ববিদ্যালয়কে ৩৩ মাসের ২৩ লক্ষ টাকা বেতন ফিরিয়ে দিলেন শিক্ষক

কিছু মানুষ আছেন যাদের চাহিদা বাকি সবার চেয়ে সম্পূর্ন আলাদা। তারা যা করেন তার সাথে সাধারণ মানুষের মিল খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টের। সাধারণ মানুষ অনেক সময় তাদের পাগল বলেও ট্যাগিয়ে দেয়, কিন্তু তাদের চিন্তাভাবনা এবং বিচার বিভাগীয় পদ্ধতি সম্পূর্নরূপে আলাদা। এরকমই একজনের খবর সামনে এল বিহারের মুজাফফরপুর বি আর আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে। সেখানে হিন্দি বিষয়ের অধ্যাপক লালন কুমার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া ২৩ লক্ষ ৮২ হাজার ২২৮ টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু ব্যাপারটা কি? কেন তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?
মুজাফফরপুরের বি আর আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তার এক দুই মাসের নয়, একেবারে পুরো তিনবছরের বেতন ফেরত দিয়েছেন কর্তৃপক্ষকে। গত ৩৩ মাস কলেজে শিক্ষকতা করে তিনি ঠিক এই পরিমাণ অর্থই পেয়েছিলেন, কিন্তু এবার সেই টাকা ফেরত দিয়ে এক অনন্য নজির গড়ার সাথে সাথেই নিজের প্রতিবাদ জারি করলেন।
আসলে এই ৩৩ মাসের প্রতিদিন তিনি ক্লাস নিয়ে গেলেও একটিও ছাত্রকে দেখতে পাননি। প্রতিবার দরজার থেকেই ফিরে আসতে হয়েছে তাকে। তার বিবেক তাকে এই বেতন ভোগ করতে সায় দেয়নি। তাই তিনি বাধ্য হয়েছেন এরকম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে। কিন্তু তিনি এই বেতন ফেরত দেবার পর থেকেই তোলপাড় চলছে সারা বিহারে। প্রশ্নচিহ্ন উঠছে সেখানের উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে।
তিনি যে শুধু বেতন ফেরত দিয়েছেন তাই নয়, এ ছিল তার নীরব প্রতিবাদ। বাকি সবার মতো মুখ গুঁজে পড়ে থাকেননি তিনি। তার এই পদক্ষেপে তর্কবিতর্ক এবং সমালোচনা চলছে বিহারের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। ওই অধ্যাপক যেখানে শিক্ষকতা করেন সেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০০০ কিন্তু ক্লাসে উপস্থিতির সংখ্যা শুন্য। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল লালন কুমারের এই পদক্ষেপকে অতিরঞ্জিত বলে অ্যাখা দিলেও শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে।