ভিক্ষা করে, আবর্জনা তুলে, ক্ষুধার্ত পেটেই চলে পড়াশোনা! মাধ্যমিকে সফল আলী হতে চায় অগ্নিবীর

সাহস নামক অস্ত্রটিতে যদি কেও শান দিতে পারে তাহলে সে জীবনের সমস্ত চড়াই উৎরাই পেরিয়ে যাবে নিমেষেই। আজ এমন একজন তরুণের কথা বলতে চলেছি যিনি নিজের সাহস দিয়ে বিশ্বজয় করতে পারেন। আজ আমরা উত্তরপ্রদেশের ১৭ বছর বয়সী শের আলীর কথা বলছি। চলুন দেখে নিই তিনি কি অসাধ্য সাধন করেছেন।
দশম শ্রেণীর রেজাল্টে শের আলী পেয়েছেন ৬৩ শতাংশ নাম্বার। এতটা পড়ার পর অনেকেই ভাবছেন এ আর এমন কি। মোটেই তো ৬৩ শতাংশ। কিন্তু না এই নাম্বার দেশের কোনো টপারের চেয়ে কম কিছু নয় তার জন্য। কিন্তু কেন এমন বলছি? তাহলে আপনাদের তার লড়াই এর গল্প জানতে হবে।
শের আলীরা ৯ ভাইবোন। তাদের পুরো পরিবার থাকে ৮/৮ এর একটি কুঁড়েঘরে। সেখানে তাদের এমনই অবস্থা যে, বিদুৎ পর্যন্ত নেই। সংসারের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, রাস্তায় ভিক্ষা করেই উপার্জন করতে হয় তাকে। এছাড়া আবর্জনা তোলার মত কাজও তার নিত্যদিনের সঙ্গী। কিন্তু এই বয়সেই শের আলী শিক্ষার গুরুত্ব বুঝেছিলেন। তাই ভিক্ষা করে হোক বা আবর্জনা তুলেই হোক, তিনি নিজের পড়াশোনার খরচ নিজেই মিটিয়েছেন।
আর এতসবের মধ্যেই তিনি ইউপি বোর্ডের মাধ্যমিকে ৬৩ শতাংশ নাম্বার পেয়েছেন। ভিক্ষা করেই হোক বা আবর্জনা তুলেই হোক, নিজের স্বপ্নকে কোনোদিন ভুলতে দেননি নিজেকে। জানলে অবাক হবেন, কিন্তু পড়াশোনার পাশাপাশি শের আলী খেলাধুলায় পদক জিতে এখন তার লক্ষ্য দেশের একজন অগ্নিবীর হওয়া।
শের আলীর বস্তিতে বেশিরভাগ পরিবারই অশিক্ষা এবং অনাহারে আক্রান্ত। এমনকি শের আলীই একমাত্র যে নিজের স্কুলশিক্ষা শেষ করতে পেরেছে। তার চারপাশের পরিবেশ পড়াশোনার উপযোগী না হলেও তিনি হাল ছাড়েননি। এই পরীক্ষার ফলাফল তার মধ্যে নতুন করে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে, এবার তার লক্ষ্য অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দেশের সেবা করা। তার বাবা বলেন যে, ‘সব প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে তার ছেলে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।’
এখন তিনি এলাকার সকল শিশুর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। তিনি যে শুধু ভালো ছাত্র তাই নয়, এর পাশাপাশি তিনি খেলাধুলার অনেক ইভেন্টে জেলা ও রাজ্য স্তরে অনেক পুরস্কার জিতেছেন। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের নয়া প্রকল্প ‘অগ্নিপথ’ যোজনার মাধ্যমে এখন অগ্নিবীর হওয়াই প্রধান লক্ষ্য তার।