দেখতে অনুব্রতর মতোই, ভাইরাল হয় ছবি! এবার মুখ খুললেন সেই মাছ বিক্রেতা ওঁ তার স্ত্রী

বীরভূমে একদা তার দাপটে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত, ভোটের সময় চড়াম চড়াম ঢাক বাজিয়েছেন, বিরোধীদের নকুলদানা খাইয়েছেন তিনি। এরপর বর্তমানে ঠিকানা বদলে পৌঁছেছেন তিহাড় জেলে। কথা হচ্ছে গরু পাচার, বালিপাচার কাণ্ডের অপরাধী বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) ব্যাপারে।
একাধিক দুর্নীতির কারণে শাসকদলের নেতার নাম জড়িয়েছে। আর সেই কারণেই আপাতত গারদের ওপারে তিনি। সোজা তিহাড় পৌঁছেছেন অনুব্রত মণ্ডল। এদিকে সদ্যই আবার তাকে নাকি দেখা গেছে মাছের বাজারে। সোশ্যাল মিডিয়াতে সেই ছবি আবার বেশ ভাইরাল হয়েছে। তাহলে কী সত্যি সত্যিই মাছ বিক্রী করছিলেন নাকি অনুব্রত মণ্ডল?
না, আসলে ছবিটি তৃণমূল নেতার নয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে যে মাছ বিক্রেতার ছবি ভাইরাল হয়েছে তিনি শেওড়াফুলি বাজারের এক সামান্য মাছ বিক্রেতা। তার সাথে অনুব্রত ওরফে কেষ্টর কোনো যোগাযোগ নেই। কিন্তু হুবহু দেখতে একই হওয়ায় তাকে অনুব্রত ভেবে ভুল করেন অনেকে।
এবিষয়ে আপনাদের জানিয়ে রাখি যে, এককালে জীবিকা নির্বাহের জন্য মাছ ব্যবসা করেছিলেন তৃণমূল নেতা। পরবর্তীকালে তিনি রাজনীতির আঙিনায় পা রাখেন। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে প্রভাব, প্রতিপত্তি। অনেকের মতে, হেন কোন অপরাধ নেই যা তিনি করেননি। ভোট লুঠ থেকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় খুনের মত অভিযোগেও নাম জড়িয়েছে তার।
উল্লেখ্য, মাছ বিক্রেতার ছবি পোস্ট করে একজন লেখেন, ‘বীরভূমের হাটশেরান্দি গ্রামের ছেলে অনুব্রত মণ্ডলের। সাধারণ পরিবার, আর্থিকভাবেও তেমন সচ্ছল ছিল না বলেই শোনা যায়। পরিচিতরা বলতে শোনা যায় , তিনি নাকি টাকা ধার করে চলতেন। বর্তমানে সিবিআই সূত্রে তাঁর সম্পত্তির হিসেব সামনে এসেছে ১০০০ কোটি টাকা। তা শুনলে এ সব অলিক বলেই মনে হবে। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা , প্রথম জীবনে মাছ বিক্রি করতেন তিনি। সেখান থেকে দোর্দণ্ডপ্রতাপ হেভিওয়েট নেতা ও এতো বিষয় সম্পত্তির হওয়ার পেছনে সবকিছুই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অনুপ্রেরণা।’
শেওড়াফুলির সেই মাছ বিক্রেতার নাম সুকুমার হালদার। বর্তমানে তার জীবন এই ভাইরাল ছবির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। সুকুমার বলেন, “যে বা যাঁরা এই কাজটা করেছে তাদের শাস্তি হওয়া দরকার। আমাকে না জানিয়ে এমন ছবি তুলেছে। মানুষ তাদের শাস্তি না দিলে ঈশ্বর দেবে।”
এ ভাবে স্বামীর ছবি ভাইরাল হওয়ার খবর পেয়ে হতবাক সুকুমারের স্ত্রী শুক্লা হালদার। তিনি বলেন, ‘‘কী অবস্থা! এটা শুনে কষ্ট পাচ্ছি। ওঁর পা ভাঙা। চিকিৎসার খরচ মেটাতে আমরা নিজেদের দু’টি বাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছি। যারা আমার স্বামীর ছবি ভাইরাল করেছে তাদের শাস্তি চাই। এটা জঘন্য কাজ করেছে।’’
অনুব্রতর সঙ্গে তুলনার কথা উঠতেই ফুঁসে ওঠেন শুক্লা। সুকুমারের স্ত্রী বলেন ‘‘৩০ বছর ধরে এই বাজারে উনি মাছ বিক্রি করেন। ওঁকে কখনই অনুব্রত মণ্ডলের মতো দেখতে নয়। গরু পাচারকারী, শয়তান, অপরাধীর সঙ্গে আমার স্বামীর তুলনা! যে এমন করেছে তার মুখে ঝাঁটা মারি।’’