ফের একবার শিরোনামে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। যত সময় এগোচ্ছে ততই সকলের চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসছে বিভিন্ন রেল ইস্যু। এখন প্রায়দিনই হয় নতুন নতুন রেল রুট তো আবার কখনও কখনও অসম্পূর্ণ রেলপথ নিয়েও আলোচনা হচ্ছে সর্বত্র। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। ফের একবার শিরোনামে উঠে এল বাংলার (West Bengal) বুকে তৈরি হওয়া এক অসম্পূর্ণ রেল রুট নিয়ে।
বেশ কিছু সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও অবধি বিশ বাঁও জলে রয়েছে ছাতনা-মুকুটমণিপুর (Chatna Mukutmanipur) রেলপথ (Railway Track) পরিষেবা। কবে এই রেলরুট সম্পন্ন হবে সেই নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন উঠছে। দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে থমকে রয়েছে এই রেল প্রকল্প। কবে এই সমস্যা মিটবে সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। জমি অধিগ্রহণের কাজ হলেও হয়নি কোনোরকম সুরাহা। মুকুটমণিপুর রেললাইনের জন্য প্রয়োজনীয় জমির প্রায় ৭০% ১৩ বছর আগে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল এবং জমির কিছু অংশে মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছিল। তবে ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলওয়ের কাজ এখনো অবধি এক চুলও এগোয়নি। এই নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভও বাড়ছে।
ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথ চালু করা হোক, সেই স্বপ্ন দেখেছিলেন রেলের স্থায়ী কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া। এদিকে শনিবার খাতড়ার এবিটিএ হলে গণ কনভেনশনের ডাক দিয়েছিল বাঁকুড়া-মুকুটমণিপুর (ভায়া ছাতনা) রেলপথ স্থাপন আন্দোলন কমিটি।
বাঁকুড়া জেলার জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা বছরের পর বছর ধরে রেল পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার জন্য কে দায়ী তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। জঙ্গলমহল এলাকার হাজার হাজার মানুষ একত্রিত হয়ে রেল সংযোগ নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে দীর্ঘদিন ধরে। শনিবার গণ কনভেনশনে হাজির হয়েছিলেন সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি। তিনি বলেন, ‘‘রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন আমাদের দলের নেতা বাসুদেব আচারিয়া ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেল প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করতে উঠেপড়ে লাগেন। সেই সময় জমি অধিগ্রহণের কাজও প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। অল্প কিছু জায়গায় সমস্যা ছিল। তবে তা কাটিয়া ওঠা কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময়েই এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় থেকেই কেন্দ্র ও রাজ্য কেউই এই রেলপথ নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি।’’
অন্যদিকে বড় মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দিয়েছে ন বাঁকুড়া-মুকুটমণিপুর রেলপথ স্থাপন আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক মধুসূদন মাহাতো। তিনি দাবি করেছেন, ‘‘২০১৪ সালে বাসুদেববাবুর পরাজয়ের পর এই প্রকল্প লাল ফিতের ফাঁসে আটকে গিয়েছে। রেল প্রতি বছর এক হাজার টাকা করে বরাদ্দ করে প্রকল্পটিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। সেই কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ হয়ে গেলেও বাকিটা হচ্ছে না।’’
এছাড়া কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের দাবি, ‘‘মুকুটমণিপুর রেলপথ আমাদের সবার কাছেই একটি স্বপ্নের প্রকল্প। দীর্ঘদিন হল এই প্রকল্পটি রেল বরাদ্দ করলেও কাজ এগোয়নি। আমাদের রাজ্য জুড়ে এমন অন্তত ৬১টি প্রকল্প রয়েছে, যেগুলি রেল বরাদ্দ করলেও রাজ্য সরকার জমি দিতে না পারায় কাজ এগোচ্ছে না।’’