নেই কোনও নাটবোল্ট, চার লেনে চলবে গাড়ি! ৪৬৫ কোটি টাকার টালা ব্রিজের বিশেষত্ব চমকে দেবে

পুজোর আগেই কলকাতাবাসীর জন্য দারুণ সুখবর। দেবীপক্ষ শুরু হওয়ার আগেই আজ উদ্বোধন হতে চলেছে টালা ব্রিজের (Tala Bridge)। বহু প্রতীক্ষিত এই সেতু উদ্বোধন হলে সমস্যা কমবে শহরবাসীর। যদিও এই সেতু উদ্বোধনে এখনো কিছু সময় বাকি ছিল, কিন্তু সময়ের আগেই কাজ সম্পন্ন হয় যাওয়ায় এই সেতু খুলে দেওয়া হয় জনসাধারনের জন্য।

৭৪৩.৪৩ মিটার লম্বা এই সেতুর নির্মাণ খরচ ৪৬৫ কোটি টাকা। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো কোনো নাটবোল্ট ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছে এই সেতুটিকে, আর তার স্থায়ীত্ব ধরা হচ্ছে ১০০ বছর! বর্তমান সময়ের সমস্তরকম আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য সাহায্য নেওয়া হয়েছে IIT Kharagpur এর। সেতু নির্মাণে যুক্ত এক আধিকারিক বলেন ‘‘সেতুটি তৈরি হয়েছে খুবই আধুনিক প্রযুক্তিতে। কোনও নাট-বোল্ট ব্যবহার করা হয়নি। এর ফলে কাঠামোর স্থায়িত্ব অনেকটাই বেড়েছে। মূল নকশাটি রেলের ছাড়পত্র পাওয়ায় সিআরএসের ছাড়পত্র পেতে দেরি হয়নি।’’

এই সেতু নির্মাণের টনক নড়ে যখন মাঝেরহাট ফ্লাই ওভার ভেঙে পড়ে। ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট ফ্লাই ওভার ভেঙে পড়ার পর শহরের সমস্ত ফ্লাইওভার এর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তখনই টালা সেতুর বেহাল দশা জানতে পারে সরকার। আসলে এই সেতু কয়েক দশকের পুরনো। সেই ১৯৬২ সালে যানজটের কথা মাথায় রেখে তখনকার সম্ভাব্য ভারবহন ক্ষমতার হিসেবে নির্মাণ করা হয় এই সেতুর। কিন্তু এবার পুনরায় এই সেতু নির্মাণের সময় আগামী ১০০ বছরের কথা মাথায় রেখেছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই সেতু নির্মাণের সময় ইন্ডিয়ান রোড কংগ্রেসের সাম্প্রতিক ‘কোড’ মেনে তৈরি করা হয় ব্রিজের নকশা। সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর অবশ্য অনেক জটিলতা সামনে আসে, কিন্তু গত বছরেই সেইসমস্ত বাধা কাটিয়ে উঠে কাজ এগিয়ে নিয়ে যায় সেতু কর্তৃপক্ষ। খোদ ভারতীয় রেল এই সেতুর নকশার অনুমোদন দেয়। টালা সেতু শুরু হলে উত্তর কলকাতার বাসিন্দাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে। তবে এখনই ভারী যানবাহন চলবে না সেতুর ওপর। আপাতত এক সপ্তাহ ছোট যানবাহন চলাচল করবে।

টালা সেতুটি চার লেনের। এটি দুটি ফ্ল্যাঙ্কে বিভক্ত রয়েছে। কিন্তু এখন অবশ্য শুধু ডান দিকের ফ্ল্যাঙ্কটি কেই সধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর হয়তো দুটি ফ্ল্যাঙ্কই রাজ্যবাসীর জন্য খুলে দেওয়া হবে। তবে এই সেতু নির্মাণের জন্য রেলের কয়েকটি আবাসন ভাঙতে হয়। ৩৮-৩৯ টি কোয়ার্টার ভাঙার জন্য রেলকে ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণ দিয়েছে রাজ্য সরকার।

tala bridge

এই সেতু তৈরীর দায়িত্বে ছিল ‘লার্সন অ্যান্ড টুবরো লিমিটেড’। তারা সময়ের আগেই পুরো প্রজেক্ট সম্পন্ন করে দেয়। প্রসঙ্গত আগের ১৫০ টন ভারসহন ক্ষমতা ছিল এই সেতুর, এখন সেই পরিমাণ অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। এবার এই সেতু পুরোদমে শুরু হওয়ায় পর চিৎপুর উড়ালপুল ভাঙার কাজ শুরু করবে পূর্ত দফতর। কোনো নাটবোল্ট ছাড়াই অত্যাধুনিক এই সেতু তৈরিতে কারিগরি সাহায্য নেওয়া হয়েছে আইআইটি খড়গপুরের।

➦ আপনার জন্য বিশেষ খবর

Back to top button